বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর নামের শেষে কেন ‘পিএলসি’ (PLC) লেখা থাকে তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই কৌতূহল রয়েছে। ‘পিএলসি’ এর পূর্ণরূপ হলো “Public Limited Company,” যা বাংলায় “সার্বজনীন লিমিটেড কোম্পানি” হিসেবে পরিচিত। এই ধরণের কোম্পানির কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
প্রথমত, এসব কোম্পানির শেয়ার সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকে এবং শেয়ারবাজারে বাণিজ্য করা যায়। এটি ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পুঁজি সংগ্রহ করতে সহায়তা করে।
দ্বিতীয়ত, শেয়ারহোল্ডারদের দায়বদ্ধতা তাদের মালিকানাধীন শেয়ারের পরিমাণ অনুযায়ী সীমাবদ্ধ থাকে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে।
তৃতীয়ত, পিএলসি ব্যাংকগুলি সহজেই শেয়ার ইস্যু করতে পারে এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি সংগ্রহ করতে পারে।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীর (PLC) শেয়ার সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকে এবং শেয়ারবাজারে কেনা-বেচা করা যায়। এই ধরণের কোম্পানীগুলি শেয়ার ইস্যু করে পুঁজি সংগ্রহ করতে পারে এবং বৃহত্তর বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারে। ব্যাংকসহ বড় বড় কোম্পানীগুলি সাধারণত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসেবে নিবন্ধিত হয়।
অন্যদিকে, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী (Ltd) সাধারণত একটি ছোট পরিসরের ব্যবসায়িক সত্তা, যেখানে শেয়ারহোল্ডারদের সংখ্যা সীমিত থাকে এবং শেয়ার হস্তান্তর সহজ নয়। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর শেয়ার শুধুমাত্র কোম্পানীর অনুমোদিত ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং সাধারণ জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রির সুযোগ থাকে না। এ ধরনের কোম্পানীর শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে প্রায়শই অন্যান্য শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি প্রয়োজন হয়।
মৌলিকভাবে, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো শেয়ারহোল্ডারদের পরিসর এবং শেয়ার হস্তান্তরের নিয়মাবলী। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী সহজেই নতুন পুঁজি সংগ্রহ করতে পারে এবং বৃহত্তর জনসাধারণের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে, যেখানে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী মূলত ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
এই পার্থক্যগুলির মাধ্যমে বোঝা যায় যে, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী উভয়েই বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক প্রয়োজন পূরণ করতে সক্ষম হয়, এবং তাদের প্রতিটির নিজস্ব সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
বাংলাদেশে কোম্পানি আইন এবং ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকগুলিকে পিএলসি হিসেবে নিবন্ধিত হতে হয়, যাতে তারা জনসাধারণের থেকে বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পারে এবং নির্দিষ্ট নিয়মকানুন অনুসরণ করতে পারে। এইসব কারণেই বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর নামের শেষে ‘পিএলসি’ লেখা থাকে।