কোটা ব্যবস্থা নিয়ে বর্তমান সময়ে অনেক চাকুরীপ্রার্থীর মধ্যে আশংকা এবং অসন্তোষ রয়েছে। এটা তাদের মধ্যে এক প্রকার মানসিক চাপ এবং অন্যায়বোধ সৃষ্টি করতে পারে। বিভিন্ন কারণ রয়েছে যার জন্য চাকুরীপ্রার্থীরা কোটা ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট।
উপরোক্ত ছবিতে দুটি চার্ট রয়েছে, যার প্রথমটি বাংলাদেশের চাকরির ক্ষেত্রে কোটার বিন্যাস এবং দ্বিতীয়টি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের প্রশাসনের চিত্র প্রদর্শন করে।
১. স্বাধীন বাংলাদেশে কোটা বিন্যাস:
এই চার্টে বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে কোটা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
– মুক্তিযোদ্ধা কোটা:৩০%
– নারী কোটা:১০%
– জেলা কোটা:১০%
– উপজাতি কোটা: ৫%
– প্রতিবন্ধী কোটা: ১%
– পোষ্য কোটা: ৫%
চাকরির ধরন অনুযায়ী মোট কোটা:
– বিসিএস:৫৬%
– ১ম ও ২য় শ্রেণির নন ক্যাডার: ৬৬%
– ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি: ৭০%
– প্রাথমিক শিক্ষক: ৬০%
২. ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের প্রশাসনের চিত্র:
এই চার্টে পশ্চিম এবং পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) প্রশাসনের মধ্যে বিভিন্ন শাখায় চাকরি বণ্টনের একটি তুলনামূলক চিত্র দেখানো হয়েছে।
– সেক্রেটারি সার্ভিস: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৫.৩৭%, পূর্ব পাকিস্তান ৪.৬৩%
– সেকশন অফিসার: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৭.৭৬%, পূর্ব পাকিস্তান ২.২৪%
– শিল্প:পশ্চিম পাকিস্তান ৯৭.৫৩%, পূর্ব পাকিস্তান ২.৪৭%
– বাণিজ্য: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৭.৮৯%, পূর্ব পাকিস্তান ২.১১%
– অর্থনীতি: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৭.১৮%, পূর্ব পাকিস্তান ২.৮২%
– শিক্ষা: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৬.৮৭%, পূর্ব পাকিস্তান ৩.১৩%
– স্বাস্থ্য: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৫.৬৬%, পূর্ব পাকিস্তান ৪.৩৪%
– আইন: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৫.৯৪%, পূর্ব পাকিস্তান ৪.০৬%
– পানি: পশ্চিম পাকিস্তান ৯৮%, পূর্ব পাকিস্তান ২%
এই চার্টগুলো থেকে বোঝা যায়, বাংলাদেশের চাকরিতে কোটার মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য সুবিধা রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, ১৯৬৬ সালের পাকিস্তানের প্রশাসনে পশ্চিম পাকিস্তানের আধিপত্য বেশি ছিল এবং পূর্ব পাকিস্তান ছিল বঞ্চিত।
সেক্ষেত্রে এটা বলাই বাহুল্য যে বর্তমানে কোটা নিয়ে দেশের অধিকাংশ চাকুরী গ্রহীতা অনেক আশংকায় ভুগছেন যা রীতিমতো তাদের সাথে এক প্রকার জুলুম